
রাজধানীর মিরপুরে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী সাংবাদিক। সোমবার রাত ১টার দিকে পল্লবী থানার বালুরঘাট এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনে তাকে রাতভর সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ:
ভুক্তভোগী নারী সাংবাদিক একটি জাতীয় পত্রিকায় সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত। এক মাস আগে তিনি জানতে পারেন যে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র ক্যান্টনমেন্টের মাটিকাটা এলাকায় নিরীহ নারী-পুরুষদের প্রলোভন দেখিয়ে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে এবং ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে তিনি নিজেই ফাঁদে পড়েন।
সোমবার রাত ১১টার দিকে তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি মাটিকাটা এলাকার সিঙ্গার শোরুমের গলিতে পৌঁছান। এ সময় মামলায় উল্লেখিত আসামিরা তাকে ঘিরে ফেলে এবং এলোপাতাড়ি মারধর করে। এরপর টেনেহিঁচড়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে রাত ১টার দিকে তাকে পল্লবী থানার বালুরঘাট এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায় এবং সেখানে তিনতলার একটি অন্ধকার কক্ষে তাকে রাতভর ধর্ষণ করা হয়।
গ্রেপ্তার ও আইনি পদক্ষেপ:
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার ওই নারী নিজেকে একজন সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএমইউজের নিন্দা ও প্রতিবাদ:
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএমইউজে) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সোহেল আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক খান এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেন, “জাতির বিবেকের উপর এমন বর্বর আঘাত আর কতকাল চলবে? আর কত স্ত্রী-কন্যা ধর্ষণের শিকার হলে সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেবে?”
তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানান এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি তোলেন।
সমাজের আহ্বান:
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সাধারণ জনগণও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন ও সাংবাদিক মহল এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।